ক্যাম্পাস ডেস্ক» দেশে যুগোপযোগী শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট (এসইডিপি) প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। বুধবার ঢাকায় একটি হোটেলে এই নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ইতোমধ্যে একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা) এর অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার, বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহযোগিতায় এই প্রকল্পের অর্থ যোগান দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এই প্রকল্প প্রসঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এই দুই স্তরের শিক্ষাকে সম্প্রসারণে নানামুখী কর্মসূচি রয়েছে। এ দুই স্তরের শিক্ষাকে বাস্তব ও যুগোপযোগী করতেই এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
তিনি বলেন, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে হলে শিক্ষার উন্নয়ন জরুরি। সেটি হতে হবে গুনগত-মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা। তবেই আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের দরবারে নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে। এ কারণেই বর্তমান সরকার কোয়ালিটি শিক্ষার দিতে ধাবিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, একই বিভাগের সচিব মো. আলমগীর হোসেন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, বিশ্বব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সঞ্জয় প্রিভাসতানয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ আরও বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদে এই প্রকল্পের মধ্যে ১৩ হাজার ৭৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। তিনটি ধাপে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে কারিগরি ও মাধ্যমিক শিক্ষার কারিকুলাম উন্নয়ন ও শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণকরণ, শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ে শিখন-শেখানো পদ্ধতির উন্নয়ন, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন, শিক্ষার্থী মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটির ব্যবহার বৃদ্ধি, মাধ্যমিক শিক্ষাকে শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণকরণ ইত্যাদি লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন কার্যক্রম গৃহীত হবে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন, মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে উপবৃত্তি প্রদান, অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং সুযোগ বঞ্চিত এলাকায় শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্নকরণ। তৃতীয় ধাপে শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে বিকেন্দ্রীকরণ, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যাস্থার উন্নয়ন। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার জবাবদিহি বৃদ্ধিসহ নানা রকম কর্মসূচি রাখা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থায় ছেলে-মেয়ের সমতা এসেছে। ঝরে পড়ার হার কমেছে। বর্তমানে শিক্ষার হার ৭২ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছে গেছে। এটি বর্তমান সরকারের একটি বড় অর্জন। কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে আমরা কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকারের চেয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছি।