ডেস্ক রিপোর্ট>> শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বদলির পর এবার ১০ কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। এসব কর্মচারী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতাধীন বিভিন্ন আঞ্চলিক অফিস, জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন কলেজে কর্মরত ছিলেন।
বুধবার মাউশি থেকে তাদের বদলি সংক্রান্ত পৃথক দুটি বদলি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক দফতরে এক নাগাড়ে তিন বছর চাকরির পর বদলি করার নিয়ম রয়েছে। গত বছরের ১০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদা নীতিমালা জারি করে বলেছিল, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা এখন থেকে একই দফতর বা সংস্থায় এক নাগাড়ে তিন বছরের বেশি সময় থাকতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, কোনো কর্মকর্তাকে একটি দফতর থেকে অন্য কোনো দফতর বা সংস্থায় বদলিও করা যাবে না।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মোতালেব এবং উচ্চমান সহকারী মো. নাসির উদ্দিনকে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করার পর অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি অভিযোগ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। এর মধ্যে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যাপক ভাবমূর্তি সংকটে রয়েছে। মূলত এই ভাবমূর্তি রক্ষায় এখন অভিযুক্ত এবং একই পদে দীর্ঘদিন থাকা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।
এ কারণে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৩০ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি, চাকরিবিধি লঙ্ঘনসহ একই প্রতিষ্ঠানে বহু বছর ধরে কর্মরত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তারই রেশ ধরে বুধবার মাউশির দুটি নির্দেশনায় আরও ১০ জনকে বদলি করা হলো।
এদের মধ্যে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের প্রধান সহকারী মো. আব্দুল আজিজকে মাদারীপুর সরকারি সুফি মহিলা কলেজে, রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সাঁট মুদ্রাক্ষরিক মো. আব্দুল আওয়াল মিয়াকে খুলনা অঞ্চলে, খুলনা অঞ্চলের অফিস সহকারী এসএম বাবলুজ্জামানকে রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অফিসে, লড়াইলের জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী মো. ফোরকান উদ্দিন মোল্লাকে উলিপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে, একই অফিসের হিসাবরক্ষক শেখ মো. জালাল উদ্দিনকে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে, টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. আজিজুর সহমান খানকে শরীয়তপুর জেলা শিক্ষা অফিসে, কুমিল্লা অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার অফিস সহকারী মো. ওহিদুল রহমানকে ময়নসসিংহ অঞ্চলে, রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসের ক্যাশিয়ার মো. ইসমাইল হোসেনকে খুলনার সুন্দরবন আদর্শ কলেজে এবং রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. সাইদুর সহমান উজ্জ্বলকে নেত্রকোনা জেলা শিক্ষা অফিসে বদলি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মাউশির পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শামসুল হুদা জাগো নিউজকে বলেন, একই স্থানে দীর্ঘদিন থাকায় ১০ কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। চাকরিবিধি অনুযায়ী এসব কর্মচারীদের এক জেলা থেকে বদলি করে অন্য জেলা বা অঞ্চলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মাউশির অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তিন বছরের অধিক সময় একই স্থানে কর্মরতের বদলি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।