মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) ‘ঢাকা মহানগরের সরকারি বিদ্যালয়ে ২০২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি নীতিমালা’ সংক্রান্ত এক সভায় ভর্তি ও পরীক্ষার নির্ধারণ করা হয়েছে।
মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে ভর্তি ফরম বিক্রি শুরু হবে। ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ভর্তি ফরম পাওয়া যাবে। ভর্তি ফরমের দাম ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম শ্রেণি রয়েছে এমন ১৭টি বিদ্যালয়ে ভর্তি লটারি আয়োজন করা হবে। তার মধ্যে প্রভাতী শাখায় সকাল ১০টায় ও দিবা শাখায় দুপুর ২টায় লটারি অনুষ্ঠিত হবে। সেদিন বিকেলেই ফলাফল প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। খাতা মূল্যায়ন হবে ২১, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর। ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, এবার মহানগরের ৪১টি সরকারি বিদ্যালয়কে ‘এ’ ‘বি’ ও ‘সি’ এই তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ১৪টি বিদ্যালয়ে ১৮ ডিসেম্বর, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ১৪টি ১৯ ডিসেম্বর ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ১৩টি ২০ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরের সব বিদ্যালয়ের শূন্য আসনের তালিকা চাওয়া হয়েছে। শূন্য আসনের তালিকা পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করা হবে। পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকার বাইরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে লটারি ও ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দিনসময় নির্ধারণ করা হবে। তারা চাইলে ঢাকা মহানগরের বিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে পারে অথবা দু-তিন দিন আগে পরেও করতে পারবেন।
প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকদের সমন্বয়ে গঠিত ভর্তি কমিটি এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী ১ জানুয়ারি ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে, তাই সব বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেয়া হবে।
ভর্তি নীতিমালায় দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরীতে সরকারি বিদ্যালয় এলাকায় ওই এলাকার ৪০ শতাংশ কোটা রেখে অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আসনের ১০ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানদের ছেলে-মেয়ের জন্য ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ২ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়গুলোর অবস্থান, শিক্ষার্থীদের সুবিধা/অসুবিধা বিবেচনা করে পরীক্ষা কমিটি বিদ্যালগুলোকে বিভিন্ন ক্লাস্টারে বিভক্ত করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা আবেদন ফরমে পছন্দক্রম উল্লেখ করে দেবে।
ভর্তি ফরম
ভর্তির ফরম বিদ্যালয়ের অফিসে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, ডিসি অফিস, বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। এবার ভর্তির আবেদন ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত থেকে বেশি হবে না।
ভর্তি পরীক্ষার সময় ও মান বণ্টন
দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-৫০, এর মধ্যে বাংলা-১৫, ইংরেজি-১৫, গণিত-২০ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা। চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-১০০। এর মধ্যে বাংলা-৩০, ইংরেজি-৩০, গণিত-৪০ নম্বর থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা। নীতিমালায় ভর্তি পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটিও করে দেয়া হয়েছে।